Log In

ঢাকা ১৭- প্রার্থীদের কাছে উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতি চান বস্তিবাসী

ঢাকা ১৭- প্রার্থীদের কাছে উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতি চান বস্তিবাসী

রেজাই রাব্বী
গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকাসহ ঢাকা-১৭ আসনে কড়াইল ও ভাসানটেকসহ কয়েকটি বস্তির অবস্থান। গুলশান-বনানীর কোল ঘেঁষে রয়েছে রাজধানীর বৃহৎ বস্তিগুলোর একটি কড়াইল বস্তি। আশপাশের এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় আরো ১৫ বস্তি। এ আসনে থাকা বস্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাটিকাটা বস্তি, ভাসানটেক বস্তি, ধামালকোট বস্তি,বারনটেক বস্তি, বাইজারটেক বস্তি, সাগরিকা বস্তি,  শাহাজাদপুর ঝিলপাড় বস্তি, নর্দ্দা সরকারবাড়ী দুলাল বস্তি, গোডাউন বস্তি, কালাচাঁদপুর বস্তি, টিঅ্যান্ডটি বস্তি, রেললাইন বস্তি, কড়াইল বস্তি, সাততলা বস্তি, ভাঙা দেয়াল বস্তি এবং এরশাদনগর বস্তি। এসব বস্তি আর গুলশান, বনানী, সেনানিবাস ও ভাসানটেকের কিছু এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন। একদিকে দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা অন্যদিকে বস্তির প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। অভিজাতদের চাওয়া-প্রত্যাশা এক রকমের আর বস্তিবাসীর চাহিদা-প্রত্যাশা আরেক রকমের। এ আসনে তাই নানান হিসাব মেলাতে হচ্ছে প্রার্থীদের। স্থানীয়দের মতে, গুলশান-বনানীর যেকোনো নির্বাচনেই এ অঞ্চলের বস্তিগুলোতে বসবাস করা ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এদের বড় অংশই সরাসরি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। ফলে এ জনগোষ্ঠীর ভোট আদায় করে নেওয়া সবার জন্য কঠিন। তারা কাকে ভোট দেবে, তাদের প্রত্যাশা চাহিদা কারা পূরণ করতে পারবে— এমন নানান হিসাব মেলাতে হয় এখানকার প্রার্থীদের।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঢাকার এই আলোচিত আসনে প্রার্থী হয়েছেন ৭ জন। যার মধ্যে রয়েছেন- বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) প্রার্থী এস এম আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন মার্কা), আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত (নৌকা মার্কা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম (বেলুন মার্কা), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কাজী শফিউল বাশার (সোনালী আঁশ মার্কা), বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আইনুল হক (কুলা মার্কা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. গোলাম ফারুক মজনু (আম মার্কা) এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী শাহ আলম (একতারা মার্কা)।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ২৫ হাজার ১৮ জন। এর মধ্যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৯১ হাজার ১৭৫ ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ভোটার রয়েছেন ৬০ হাজার ৮২৫ জন। এ ছাড়া, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৯ হাজার ৫৬২ জন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৬৯ হাজার ৩২ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৬৪ হাজার ৪২৪ ভোটার।

এসব ভোটারের বড় একটি অংশই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা বস্তিবাসী।
বস্তির বাসিন্দারা বলেন, এই আসনে আমরা যারা বস্তিবাসী তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, আমাদের জন্য অর্থাৎ গরিব মানুষদের জন্য যিনি কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেবেন তাকে ভোট দেব। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, আমাদের দাবি একটাই এখানকার গরীব অসহায় মানুষদের যিনি কাজের ব্যবস্থা করে দেবে আমরা তাকেই ভোট দেব। আমাদের বস্তিতে মাঝে মধ্যেই গ্যাস থাকে না, লাইন কেটে দেয়, বৃষ্টি হলেই প্রতিটি গলিতে পানি জমে যায়। এ ছাড়া, মশা আর নোংরা পরিবেশের দুর্গন্ধের কারণে মাঝে মধ্যে থাকা যায় না। যেহেতু আমরা গরিব মানুষ তাই বস্তি ছাড়া ভালো জায়গায় গিয়ে থাকতেও পারি না। তাই আমাদের এসব সমস্যার সমাধান যে করে দেবে, তাকেই ভোট দেব।

ভাসানটেকের বাসিন্দারা বলেন, আমরা চাই যিনি বুঝে শুনে সংসদে কথা বলতে পারবেন এবং ভোটারদের দাবি পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবেন তিনিই নির্বাচিত হোক। যার ভাগ্য ভালো তিনিই জিতবেন। এটাও দেখার বিষয় মানুষ কাকে পছন্দ করবেন।

সময়ের বাণী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *