Log In

দেশ এক চরম ক্রান্তিকাল  অতিক্রম করছে : ইসলামী সমাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক 
দেশ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এমন মন্তব্য করে ইসলামী সমাজের আমীর হজরত সৈয়দ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। দেশ ও জাতির মানুষ বিভিন্ন ইস্যুতে দল ও উপদলে বিভক্ত হয়ে অনৈক্যের পথে চলছে। মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায় বিচারের পরিবর্তে বৈষম্যের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে।
চাকরিতে কোটা বৈষম্য ইস্যু নিয়ে আন্দোলন এবং আন্দোলন দমনের নামে মানুষ হত্যা এবং দেশের মানুষের টাকায় উন্নয়নমূলক স্থাপনাসহ মাল-সম্পদ ধ্বংস করার নজিরবিহীন ঘটনা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে গেছে। ছাত্র-ছাত্রী, শিশু, নারী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক ও পুলিশসহ শতশত মানুষের প্রাণ ঝরে গেছে। এসব হত্যাকান্ড এবং দেশ ও জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করার কাজে কারা জড়িত যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদেরে বিচার করতেই হবে। আমরা এসব হত্যাকন্ডসহ সকল অমানবিক কর্মকান্ডের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি এবং এরইসাথে যারা নিহত ও আহত হয়েছে তাদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আজ রবিবার (৪ আগস্ট) বেলা ১২ টায় ইসলামী সমাজের কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মাদ ইয়াছিনের সঞ্চালনায় “দেশে চলমান নাজুক পরিস্থিতির মৌলিক কারণসমূহ এবং সমাধানের উপায়” বিষয়ে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী সমাজের আমীর এসব কথা বলেন।
এসময় ইসলামী সমাজের আমীর ৩ দফা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন-
১) ২৪ আগস্ট ২০২৪ শনিবার, বাদ আছর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোর্কারমের উত্তর গেইটে মানবাধিকার সমাবেশ, ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার, বিকাল ৩ ঘটিকায় নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড ট্রাক স্ট্যান্ডে মানবাধিকার সমাবেশ এবং ২৬ অক্টোবর শনিবার, বিকাল ৩ ঘটিকায় গাজীপুর সদর শিববাড়ী মোড়ে মানবাধিকার সমাবেশ
২) ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট ২০২৪ ইং গাজীপুর সদর, বটতলা উনিশে চত্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব অভিমূখে তিন দিন ব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ যাত্রা।
৩) দেশব্যাপী টিম ভিত্তিক গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণের সাথে মতবিনিময় ও চিঠি প্রদান করা হবে।
এসময় তিনি সরকার, প্রশাসন, সাংবাদিক, সুশিল সমাজ, ছাত্র জনতাসহ দেশবাসী সকলকে সংঘাত ও সংঘর্ষের পথ ত্যাগ করে, ইসলামী সমাজের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল সর্বজনাব মুহাম্মাদ ইউসুফ আলী মোল্লা, সোলায়মান কবীর, আমীর হোসাইন, আজমুল হক, মোঃ নুরুদ্দিন, আসাদুজ্জামান, সেলিম মোল্লা, আবু বকর সিদ্দিক, হাফিজুর রহমান, সোহাগ আহমেদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ হুমায়ূন কবীর বলেন, আন্দোলনের শুরুতে সরকার ছাত্রদের চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত ন্যায্য দাবী মেনে নিলে এসব মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতনা। দেশ ও জাতীয় জীবনে এহেন চলমান নাজুক পরিস্থিতির মৌলিক কারণ সমূহ হচ্ছে- ১) সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও শাসন-কর্তৃত্ব। ২) আল্ কুরআন বিরোধী মানুষের মনগড়া আইনে রচিত সংবিধানের আনুগত্য এবং ৩) মানুষের মনগড়া আইনে রচিত সংবিধানের ধারক-বাহক নেতা বা সরকারের আনুগত্য। এ সকল কারণ সমূহের সমাধান না হলে দেশে চলমান নাজুক পরিস্থিতির অবসান হবে না এবং দেশের অর্থনীতিও মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মূখীন হবে।
ইসলামী সমাজের আমীর বলেন, বৈষম্য শুধু চাকরির ক্ষেত্রেই নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টরে আজ বৈষম্য। শিক্ষা, চিকিৎসা, অর্থনীতিসহ যেদিকেই আমরা তাকাই শুধুই বৈষম্য। সকল বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করে সকলের সকল অধিকার আদায় ও সংরক্ষণ করতে হলে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ‘ইসলামী সমাজ’ আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে চলমান নাজুক পরিস্থিতিতে সরকার, সকল স্তরের প্রশাসন, সেনাবাহিনী, সংবাদিক ও পেশাজীবি মানুষসহ দেশবাসী সকলে চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আতঙ্কিতভাবে জীবন যাপন করছে এ কথার উল্যেখ করে তিনি বলেন, ইসলামী সমাজ হলো সকল মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

সময়ের বাণী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *