Log In

গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজার হাজার শিশুর লাশ: ইউনিসেফ

গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজার হাজার শিশুর লাশ: ইউনিসেফ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজার হাজার নিখোঁজ শিশুর লাশ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল এই ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে।

নিরলস ও বর্বর এই আগ্রাসনে গাজায় ইতোমধ্যেই প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় ‘হাজার হাজার নিখোঁজ শিশুর লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে’ বলে ইউনিসেফের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর টেড চাইবান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন।

সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রধানের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ সভায় বক্তৃতা করার সময় টেড চাইবান একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে ৪ হাজার ৩১২ ফিলিস্তিনি এবং ৭০ জন ইসরায়েলি শিশু নিহত হয়েছে বা পঙ্গু হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, যা প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হত্যা এবং পঙ্গুত্বের সমস্ত যাচাইকৃত ঘটনার ৩৭ শতাংশ।’

টেড চাইবান আরও বলেন, কিন্তু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা শিশুদের সংখ্যা এবং মানবতাবাদী সংস্থা ও ব্যক্তিদের সেখানে প্রবেশ করতে না দেওয়ার অর্থ হলো গাজায় নিহত শিশুদের আরও হাজার হাজার ঘটনাকে প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি জাতিসংঘ।

এদিকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে বিশ্বজুড়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

সংস্থাটি গত সোমবার জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজা উপত্যকায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে, অনেককে আটক করা হয়েছে, অনেককে আবার অচিহ্নিত কবরে সমাহিত করা হয়েছে আবার অনেকেই তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক এই দাতব্য সংস্থা বলেছে, গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েল নিরলসভাবে স্থল ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে তথ্য সংগ্রহ এবং তা যাচাই করা ‘প্রায় অসম্ভব’। তবে গাজায় অন্তত ১৭ হাজার শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া আনুমানিক ৪ হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছে এবং বিভিন্ন গণকবরেও অসংখ্য শিশুকে সমাহিত করা হয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, ‘অন্যান্যদের জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে, যার মধ্যে অজ্ঞাত সংখ্যক শিশুকে আটক করা হয়েছে এবং জোরপূর্বক গাজা থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া তাদের পরিবারের কাছে তাদের অবস্থান এখনও অজানা।’

সেভ দ্য চিলড্রেনস-এর রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর মিডল ইস্ট জেরেমি স্টোনার বলেছেন, ‘পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জন কোথায় অবস্থান করছে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। কোনো অভিভাবককে যেন তাদের সন্তানের মৃতদেহ খুঁজে বের করার জন্য ধ্বংসস্তূপ বা গণকবর খুঁড়তে না হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো শিশুর একা ও অরক্ষিত অবস্থায় থাকা উচিত নয়। কোনো শিশুকে আটকে রাখা বা জিম্মি করাও উচিত নয়।

সময়ের বাণী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *